৩ ডিসেম্বর ২০১৬ শনিবার | সন্ধ্যা ৭টা | ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তন, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি
নাটক: সাধনা আহমেদ
নির্দেশনা: ইউসুফ হাসান অর্ক
দল: বিবর্তন (যশোর, বাংলাদেশ)
নাটক কাহিনী:
মায়ের গর্ভনাড়ী থেকে উত্থিত রক্তেভেজা রূপকথার মতো সে কোন্ কালের এক মান্দি-গোত্রনারী সূচনা করেছিলো ফসল তোলার উৎসব ওয়ানগালর, যার মাদকতা মান্দিযুবক কানু সাংমার চোখে নেশার ঘোর লাগিয়ে রাখে। প্রেমে উন্মত্ত হয়ে আরেক মান্দিযুবতী মিত্তি মারাকের পায়ের মলের শব্দের পেছনে বৃক্ষের আড়ালে আড়ালে অবিরাম ছুটে চলে সে। আর মিত্তি তার পোষা ফইট্যার (খরগোশ) পেছন পেছন ছুটে চলে। তা দেখে কানুর চোখেমুখে ঈর্ষার আগুন লকলকিয়ে ওঠে, কানু ভাবে আমি মিত্তিকে এতো ভালোবাসি কিন্তু মিত্তি খালি তার খরগোশকেই ভালোবাসে কেন? মুহুর্তে কানু তার বর্শা দিয়ে মিত্তির খরগোশকে হত্যা করে। তা দেখে অরণ্যবিদারী চিৎকারে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মিত্তি। কানু গিয়ে মিত্তিকে ধরতেই বাঘিনীর মতো কানুর উপর ঝাপিয়ে পড়ে মিত্তি, কিল চড় লাথিতে ঘুসি মেরে চলে যায় আর তাতেই মিত্তির স্পর্শে পুলকিত কানু। কিছুক্ষণ পরে বনের ভেতর থেকে মিত্তির আতর্চিৎকার শুনতে পেয়ে কানু ছুটে গিয়ে দেখে এক বুনোষাঁড় মিত্তিকে তাড়া করছে। প্রচন্ড লড়াইয়ের মাধ্যমে ষাঁড়বধ করে কানু, তা নিয়ে মান্দিপল্লী ভোজের উৎসবে মাতে, সেখানে আনন্দে নেচে চলে কানুর ঠাকুমা কলাবতী সাংমা, তার বয়স কতো কেউ জানে না, সে অবিরাম বলে চলে মান্দিদের না না উপকথা। প্রেম হয়ে যায় মিত্তি ও কানুর কিন্তু মিত্তির মা রুগালা মারাক্ কানুর সাথে মেয়ের বিয়ে দেবে না। পরিবর্তীত অর্থনৈতিক জীবন বাস্তবতায় রুগালা মারাক্ দেখেছে উন্নয়ের নামে বার বার তাদের ভূমি দখল হওয়ার ফলে এখন আর চাষের জমি অবশিষ্ট নেই, জুমচাষ বন্ধ, সব খাবার কিনতে হয় টাকা দিয়ে তাই সে তার মেয়েকে শহরে পাঠাবে টাকা রোজগার করতে। মায়ের একথা শুনে কানু আর মিত্তি জঙ্গল সাফ করে চাষের জমি বের করে আবার চাষ করার স্বপ্ন দেখে, একথা শুনে মিত্তির মা মনে করিয়ে দেয় এখন আর জঙ্গল কাটা যায় না, কারণ জঙ্গল আর তাদের নয়, জঙ্গল এখন সরকারের। কানু ভাবে জঙ্গল আর তার নয় তবে কি মিত্তিও তার নয়? এই সত্যের মুখোমুখি হয়ে পর্বত আর নদীর জাতক কানু, টাকা রোজগারে জন্য নগরের কাছে এক বিলাস-বহুল রিসোর্টের রাত প্রহরির চাকুরি নিয়ে চলে যায়। কানুর প্রতীক্ষায় যুবতী মিত্তির দিন যেন আর কাটে না… মিত্তির মা তাকে শহরে পাঠাতে চায়, তবে মিত্তি কানুর জন্য অপেক্ষা করবে কিছুতেই শহরে যাবে না বলে জানায়। এমন সময় ‘দেশ হাউজিংএন্ড ডেভেলপিং কোম্পানি’ আধুনিক পর্যটন নগরী গড়ে তোলার জন্য মান্দি পল্লীর পুরো এলাকা লিজ নিয়ে নেয়, নিজেদের প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মান্দিদের বসতভিটা উন্নয়নে মান্দিদের সাথে চুক্তি করতে চায় দেশ তারা। কিন্তু কলাবতী সাংমা মান্দিদের মনে করিয়ে দেয় তাদের উপরে বয়ে যাওয়া যুগ-যুগান্তরের অত্যাচারের ইতিহাসের কথা, তাতে মান্দিরা দো-টানায় পড়ে, তারা কি আবার ভূমি হারাবে ? আবার উচ্ছেদ হয়ে কোথায় যাবে তারা ? হাউজিং কোম্পানি ও মান্দিদের মৈত্রী চুক্তি কি হবে? কানু কি ফিরে আসবে মিত্তির কাছে… ?
অভিনয়
তাতারারাবুগা/কথক: সানোয়ার আলম খান দুলু
নক্মা: নওরোজ আলম খান চপল
কানু: জাহিদুল ইসলাম যাদু
মিত্তি: তানজিলা আক্তার জিনি
কলাবতী সাংমা: অদিতি সরকার রুমা
সুসিমি: আফসানা বিউটি
রুগালা: সাবিকুন্নাহার কাকলী
সঞ্জু: কমল বিশ্বাস
নিখি: দেবাশীষ মল্লিক
সিধু: আসিফ খান
দিগেন: বিবেক কুমার বিশ্বাস
এ্যান্টনী: শেখ জাহিদ
ছোট সাহেব: মানস বিশ্বাস
চামচা: কামরুল হাসান রিপন
ফরেস্টার: দেবদুলাল রায়
মান্দিবাসী: নুরুজ্জামান আকাশ
অর্পিতা সিকদার তুলি
রুহিনা শারমিন এলিস
শারমিন সুলতানা সাথী
ইমামুল হক
পুলিশ ১: আতিকুজ্জামান রনি
পুলিশ ২: রাম প্রসাদ রায়
সঙ্গীত দল
মৌসুমী আক্তার বন্যা
সুজিত কুমার সাহা
মীম সুলতানা দোলা
সৌমেন পাল
দেবদুলাল রায়
নুরুজ্জামান আকাশ
অর্পিতা সিকদার তুলি
নেপথ্যে :
সহকারী নির্দেশক: মানস বিশ্বাস
সঙ্গীত: ইউসুফ হাসান অর্ক
পোশাক পরিকল্পনা: আইরিন পারভীন লোপা
আলোক পরিকল্পনা: শাহীন রহমান
সেট পরিকল্পনা: ইউসুফ হাসান অর্ক
কোরিওগ্রাফ: অদিতি সরকার রুমা
প্রপস নির্মাণ: আতিকুজ্জামান রনি
সেতু
সৌমিত্র মন্ডল
আসিফ খান
তরিকুল ইসলাম
প্রজেক্টর: সৌমিত্র মন্ডল
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ