বটতলা রঙ্গমেলা ২০১৯ ভাবনা
জ্বলছে আমাজন, গলে যাচ্ছে মেরু অঞ্চলের বরফ, যুদ্ধের উন্মাদনা ছড়িয়ে গিয়েছে দেশে দেশে। গোলকায়ণের যুগে একদিকে লোভী স্বার্থপর দ্রুততম গতির ধণিকশ্রেনীর ঋদ্ধির নির্লজ্জ বিস্তারের বয়ান অন্যদিকে মানবতা ভুলুন্ঠিত দিকে দিকে। ধর্মের নামে-জাতিসত্তার নামে, ভূমিলুন্ঠনের দামে – মায়ানমারে, আরাকানে, সিরিয়ায়, ইয়েমেনে, কাশ্মীরে নিপীড়ন চলেছে নানা চেহারায়। পুঁজিসভ্যতার প্রধান শিকার মানবতা। তার চেয়ে বেশি দুস্থ আজ ধরিত্রী। নরওয়ের আদিবাসী সামি বা সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার-ইরাবতি, গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের প্রবাল, সাইবেরিয়ার মিথেন ভাসা সাগরের মৎস্যকুল কেউ বাঁচেনা পুঁজির বিশ্বায়নের নির্লজ্জ লোভের থাবা থেকে। শিক্ষার দর্শন আজ বাজারমুখী; সামাজিক বন্ধন ভার্চুয়াল; পরাবাস্তব-জাদুবাস্তবের কাল ছেড়ে যন্ত্রবাস্তবের কালে প্রবেশ করেছে আমাদের বাস্তবতা। এ বাস্তবতা মেনে নিয়ে ধ্বংসের অপেক্ষায় বসে থাকা যায় না! যদি ফেরাতে চাই প্রাণ তবে বুঝে নেওয়া জরুরী যে এখন সময় যূথতার, মেলবন্ধনের— প্রকৃতিতে-মানুষে, মানুষে-মানুষে, দেশে দেশে ঐকতান বাজলেই কেবল মানবতা আর ধরিত্রীর প্রাণভোমরা একসাথে টিকে যাবে -জিতে যাবে শুভবোধ! জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে হালের সম্মুখযোদ্ধা কিশোরপ্রাণেরা যেমন করে ভেঙেছে নৃশংস নৈঃশব্দ্য তেমনি তাদের সাহসে সাহস মিলিয়ে বিশ্বের পক্ষে, প্রাণের পক্ষে দাঁড়াবার সুনন্দ সাহস চাই আজ। আজকের পথ একটাই— উচ্চে তুলে শির, কন্ঠে দিয়ে শান, সৃজনে-আনন্দে আমরা ফেরাবই ধ্বংস থেকে সৃষ্টির পথে— প্রাণে প্রাণ মেলাবোই গোলকের সব প্রান্ত ছুঁয়ে।